Live Entertainment & Love Lifestyle

Thursday, April 17, 2025
Tollywood

মীরাক্কেলের মঞ্চ থেকে বড়পর্দায় ‘সিনেবাপ’, ছবির নাম জানেন?

মীরাক্কেলের দৌলতে ‘সিনেবাপ’ মৃন্ময় কে চেনেন বহু মানুষ। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর অনুরাগীর সংখ্যাও নেহাত কম নয়। তবে এবার তাঁকে দেখা যেতে চলেছে বড়োপর্দায়। নতুন একটি বাণিজ্যিক ছবির মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করতে চলেছেন তিনি।

গতবছরেই, স্বভূমি এন্টারটেইনমেন্ট ও ডঃ প্রবীর ভৌমিকের প্রযোজনায় মুক্তি পেয়েছিল পরিচালক অনির্বাণ চক্রবর্তী পরিচালিত ‘ও অভাগী’। কথাশিল্পী শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ছোটোগল্প ‘অভাগীর স্বর্গ’ অবলম্বনে তৈরি সেই ছবিতে অভিনয় করেছিলেন দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাফায়েত রশিদ মিথিলা। জাতীয় স্তরে একাধিক পুরস্কারও জিতেছে সেই ছবি। ‘ও অভাগী’-র নির্মাতাদের সঙ্গে এবার যোগ দিচ্ছে ‘সিনেবাপ এন্টারটেইনমেন্ট’-ও। আসছে পুরোদস্তুর বাণিজ্যিক ছবি ‘খাঁচা’।

ছবির একেবারে কেন্দ্রে আছে টিয়াবন গ্রাম। আপাতশান্ত এই গ্রামের গর্ভে শিকড় গেড়ে বসে আছে এক নারীপাচারচক্র। মূল চরিত্র কমলেশের (মৃন্ময়) দিদিকেও তুলে নিয়ে গিয়েছিল তারা। বিচার চেয়ে তার মা-ও হয়েছিল অপরাধীদের শিকার। তিরিশবছর ধরে এই চক্র চালাচ্ছে টিয়াবনের ‘মামা’ বিশ্বম্ভর ও ‘মামী’ মীনাক্ষি। সেই নারীপাচার চক্র, অন্ধকার অপরাধজগত আর এই দুর্ধর্ষ অপরাধীদের বিরুদ্ধেই লড়াই করে চলেছে কমলেশ। কীভাবে জয়ী হবে সে, সে-গল্পই বলবে ‘খাঁচা’।

এই ছবির জন্য নিজেকে আমূল বদলে ফেলেছেন মৃন্ময় । ‘মীরাক্কেল’-এর সেই সাদামাটা ছেলেটা নিজেকে তৈরি করেছে গত একবছর ধরে। তিনি  বলেন, ‘কমলেশ চরিত্রের জন্য একটা মাসকুলার ফিগারে ট্রান্সফর্মেশন দরকার ছিল। তার জন্য শুটিং-এর আগের ৬ মাস মেইনস্ট্রিম স্পোর্টসম্যানদের মতো একটা হার্ড রুটিন আর হার্ড ডায়েটিং ফলো করতে হয়েছে। তবে এই ক্ষেত্রে আমার পূর্ব অভিজ্ঞতা ছিল। আমি ডিস্ট্রিক্ট বডি-বিল্ডিং চ্যাম্পিয়নশিপে ‘মি. কুচবিহার’ হয়েছিলাম কলেজজীবনে। আর ‘মি. নর্থ বেঙ্গল’ প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় হয়েছিলাম। সেই অভিজ্ঞতা খুব কাজে লেগেছে এই ট্রান্সফরমেশন ট্রেনিং-এ।’

মৃন্ময় ছাড়াও এই ছবিতে অভিনয় করছেন রজতাভ দত্ত, মীর, প্রত্যুষা পাল, অনিন্দ্য বন্দ্যোপাধ্যায়, কাঞ্চনা মৈত্র, সোনালী চৌধুরী, কৃষ্ণ বন্দ্যোপাধ্যায়, ইমন চক্রবর্তী, অরুণাভ দত্ত, নবাগতা পূজা চট্টোপাধ্যায় এবং অন্যান্যরা। এর আগে একাধিক টেলিভিশন প্রোডাকশন (কল্পকাহিনি ও অ-কল্পকাহিনি), স্বল্পদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র, তথ্যচিত্র, বিজ্ঞাপনচিত্র, কর্পোরেট ফিল্ম এবং ওয়েব সিরিজ তৈরি করেছেন পরিচালক অনির্বাণ চক্রবর্তী। এই ছবি নিয়ে তিনি বলেন, ‘সিনেমা মানেই বিনোদন, তাই আমি সবসময় নতুন দর্শকদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করি। আমার প্রযোজককে ধন্যবাদ, যিনি আগের মতোই আমার উপর বিশ্বাস রেখেছেন। বর্তমান প্রবণতা অনুযায়ী, বড় বড় তারকারা সিলভার স্ক্রিন থেকে OTT এবং অন্যান্য সোশ্যাল নেটওয়ার্ক প্ল্যাটফর্মে আসছেন শো’বিজে টিকে থাকার জন্য। তাহলে কেন এই প্ল্যাটফর্মগুলোর প্রতিভাবান এবং দক্ষ তারকারা বড়োপর্দায় পা রাখতে পারবেন না?’

প্রযোজক ড: প্রবীর ভৌমিক জানান, ‘গ্রামবাংলার সাধারণ মানুষ এখনও বাণিজ্যিক ফিচার ফিল্ম দেখতে খুব ভালোবাসে। আমি মানুষের জন্য দারুণ সিনেমা তৈরি করতে চাই, যা শুধুমাত্র বাংলা সিনেমার উপর প্রভাব ফেলবে না, বিশ্ব চলচ্চিত্রেও একটি দাগ কাটবে।’

গত ছবির মতো এই ছবিতেও সঙ্গীত পরিচালনার ভার থাকছে মৌসুমী চট্টোপাধ্যায়ের উপর। এই একবিংশ শতাব্দীতেও, সঙ্গীত পরিচালক বললেই আমাদের মনে আসে কোনো পুরুষ সঙ্গীতশিল্পীর কথা। সেই ‘পুরুষশাসিত’ মিউজিক ইন্ডাস্ট্রিতে, নিজের দক্ষতার জোরে পোক্ত জায়গা করে নিয়েছেন মৌসুমী। তাঁর সঙ্গীত পরিচালনায় ছবির দুটি গানের মধ্যে হার্ড রক গান ‘রিক্ত তিক্ত’ গেয়েছেন বাংলা ব্যান্ড ‘ক্যাকটাস’খ্যাত সিধু। আর দ্বিতীয় গান ‘আলাদিন’ গেয়েছেন জনপ্রিয় গায়ক দুর্নিবার সাহা।

পরিচালনার পাশাপাশি ছবির কাহিনি ও চিত্রনাট্য লিখেছেন অনির্বাণ নিজেই। চিত্রগ্রহণের দায়িত্বে মলয় মণ্ডল। ভাগ্যের ফেরে বাস্তবজীবনে পাচারের অন্ধকার চক্রের সম্মুখীন হয়েছিল যারা, যারা ফিরে এসেছে নরকের অন্ধকার থেকে, এই ছবির সঙ্গে যুক্ত তারাও। তবে এখনই সে-ব্যাপারে খোলসা করে সব জানাচ্ছেন না নির্মাতারা। তবে গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু নিয়ে তৈরি এই বাণিজ্যিক ছবি যে মানুষের মনে দাগ কাটতে পারবে, তা বোঝা যাচ্ছে এখন থেকেই।

Author

  • Debasmita Biswas

    বেথুন কলেজ থেকে উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতক। পড়ার নেশা ছোট থেকে, প্রাথমিকভাবে লেখালেখির শুরু শখেই। তারপর সংবাদপত্র, পত্র-পত্রিকায় সমালোচনা পড়ার অভ্যাস আর বিভিন্ন নাটক, সিনেমা দেখার পর বিশ্লেষণ করার শখ থেকেই ইচ্ছে সমালোচক হওয়ার। বিনোদনজগতের বিভিন্ন খবর করার পাশাপাশি নাটক এবং সিনেমা দেখে তার গঠনমূলক সমালোচনাও করেন তিনি।

    View all posts

Debasmita Biswas

বেথুন কলেজ থেকে উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতক। পড়ার নেশা ছোট থেকে, প্রাথমিকভাবে লেখালেখির শুরু শখেই। তারপর সংবাদপত্র, পত্র-পত্রিকায় সমালোচনা পড়ার অভ্যাস আর বিভিন্ন নাটক, সিনেমা দেখার পর বিশ্লেষণ করার শখ থেকেই ইচ্ছে সমালোচক হওয়ার। বিনোদনজগতের বিভিন্ন খবর করার পাশাপাশি নাটক এবং সিনেমা দেখে তার গঠনমূলক সমালোচনাও করেন তিনি।