EntertainmentMusic

মাইহার ঘরানার উদযাপন, সাক্ষী থাকল কলকাতা

শীতের মরসুম। কলকাতায় একের পর এক রাগসঙ্গীতের অনুষ্ঠান। কিন্তু শুধুমাত্র ঘরানা কেন্দ্রিক রাগসঙ্গীতের আসর সারা দেশে বিরল। সেই বিরল অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকল কলকাতা। শুধুমাত্র মাইহার ঘরানাকে নিয়ে ২৫ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়ে গেল ধ্রুপদী সঙ্গীতের আসর “ইকোস ফ্রম মাইহার”। এই উৎসবের উদ্যোক্তা মাইহার ঘরানারই এই সময়ের অন্যতম সেতারশিল্পী পার্থ বোস।


মাইহারের রাজদরবারে  ‘বাবা’ আলাউদ্দিন খাঁ  সাহেবের আগমন, অবস্থান ও ওই শহরে আমৃত্যু বসবাস। ‘বাবা’-র গুরুকুল থেকে উঠে এলেন এক ঝাঁক দিকপাল শিল্পী – আলী আকবর, অন্নপূর্ণা, রবিশঙ্কর, নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায়, বাহাদুর খাঁ, পান্নালাল ঘোষ এবং আরো অনেকে ,প্রতিষ্ঠিত হল “মাইহার ঘরাণা” – যার প্রতিনিধিদের বিশ্বব্যাপী বিচরণক্ষেত্র।


যন্ত্র সঙ্গীতের একটি ঘরাণায় সরোদ, সেতার, সুরবাহার, বাঁশুরী, বেহালা, সন্তুর সহ এতগুলি যন্ত্রের ব্যবহার ও বাদনশৈলীর বৈচিত্র্য সঙ্গীতের ইতিহাসে বিরল। সেই বৈশিষ্ট্যকে তুলে ধরার প্রয়াসের মধ্যে জন্ম নিয়েছে “ইকোস ফ্রম মাইহার”। “মাইহারের প্রতিধ্বনি” – কলকাতা তথা বাংলার একমাত্র ঘরাণাভিত্তিক সঙ্গীত সম্মেলন।


পণ্ডিত পার্থ বসুর উদ্যোগে দ্বিতীয়বার এই সম্মেলন হয়ে গেল জ্ঞান মঞ্চে। সকাল এগারোটা থেকে রাত ন’টা পর্যন্ত চলল এই অভিনব ধ্রুপদী যন্ত্র-সঙ্গীতের আসর। কুহক সংস্থার আয়োজনে এই সঙ্গীতসভা উৎসর্গ করা হল মাইহার পরম্পরার দুই সঙ্গীত সাধকের স্মৃতির উদ্দেশ্যে –পণ্ডিত মনোজশংকর ও ওস্তাদ আশীষ খাঁ। শিল্পী-তালিকায় থাকছেন মাইহার ঘরানার  আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিপ্রাপ্ত ছয়জন শিল্পী– সিরাজ আলী খাঁ, বসন্ত কাবরা,  কেন জুকারম্যান, নিত্যানন্দ হলদিপুর, তরুণ ভট্টাচার্য ও ইন্দ্রদীপ ঘোষ। পন্ডিত পার্থ বসুর কথায়, “মাইহার ঘরানার যে গভীরতা, ব্যাপ্তি এবং বৈচিত্র্য তার উদযাপন এই উৎসব। শুধুমাত্র একটা ঘরানাকে কেন্দ্র করে এমন অনুষ্ঠান কলকাতায় এই প্রথম। অগণিত মানুষের সাড়া পেয়ে ভাল লাগল।” সারাদিনের এই আসর সঙ্গীতপ্রেমীদের মধ্যে এক অন্যরকম উৎসাহ ও চর্চার সঞ্চার করেছে।

Author