সলিল চৌধুরীর জন্মশতবর্ষ উদযাপন পথসঙ্গীতশিল্পীদের

কলকাতা স্ট্রিট মিউজিক ফেস্টিভ্যালের আগের চার সিজনের সাক্ষী থেকেছে শহরবাসী। গত ২৯শে নভেম্বর সল্টলেকের সেক্টর ফাইভে এবার উদযাপিত হল পথশিল্পীদের এই অনুষ্ঠানের পঞ্চম সিজন। এবার তাঁরা শ্রদ্ধা জানালেন শ্রদ্ধেয় সলিল চৌধুরীকে।

আচ্ছা, চোখ বন্ধ করে কখনো পাখির কূজন শুনেছেন? কিংবা নদীর কুলকুল শব্দ, মন্দিরের ঘন্টাধ্বনি, মসজিদের আজান? তাহলে নিঃসন্দেহে সঙ্গীতের ব্যাপ্তি আপনার জানা। শহুরে ধাঁচের পাশ্চাত্য সঙ্গীত হোক, বা মেঠো সুরের একতারা, সঙ্গীত আসলে এক সার্বজনীন ভাষা, চেনা-অচেনার মেলবন্ধন। আর সেই সঙ্গীতের সঙ্গেই রাজপথের এক নিবিড় সম্পর্ক। গ্রামের বাউলশিল্পীদের গান থেকে শুরু করে বিয়ের অনুষ্ঠানে ব্যান্ডপার্টির মিউজিক, সবকিছুরই প্রধান মঞ্চ কিন্তু পথ। সেই পথ-সঙ্গীতশিল্পীদের উদ্যোগেই অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে এই মিউজিক ফেস্টিভ্যাল।
এই অনুষ্ঠানের মূল আয়োজক বিশিষ্ট সাংস্কৃতিক কর্মী তথা জনসংযোগ আধিকারিক সুদীপ্ত চন্দ। সঙ্গী হিসেবে তিনি পাশে পেয়েছেন লন্ডননিবাসী প্রবাসী সঙ্গীতশিল্পী সোমা দাস। অনুষ্ঠানটি নিবেদন করেছেন শ্যাম সুন্দর কোং জুয়েলার্স। সহায়তায় ছিলেন ‘ক্রাফ্ট কফি’, ‘ইনফিনিটি’, ‘ফ্লিক্সবাগ মিউজিক’, সোমা দাস, কিংশুক দাস প্রমুখ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অন্তরা চৌধুরী, সৌম্য দাশগুপ্ত, রকেট মন্ডল, শ্যাম সুন্দর কোং জুয়েলার্সের কর্ণধার রূপক সাহা, ‘ইনফিনিটি’র মার্কেটিং ভাইস প্রেসিডেন্ট অনিন্দ্য দাস।
দেবাশিস বসুর সঞ্চালনায় সলিল চৌধুরীর সুরে তৈরী সঙ্গীত পরিবেশন করে শিল্পীরা এই অনুষ্ঠান উদযাপন করেছেন। অন্তরা চৌধুরী (সে গান আমি যাই যে ভুলে), ‘থার্ড স্টেজ’ নামে পরিচিত সৌরজ্যোতি-কৃষ্ণেন্দু (সরস্বতী নদীতীরে), ঋদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায় মিউজিক অ্যাকাডেমির ছাত্র –ছাত্রীরা (প্রান্তরের গান আমার), মাধুর্য মুখোপাধ্যায় (শোনো কোনো একদিন), চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ও মানু (আমি চলতে চলতে থেমে গেছি), জয়া নাগ (দুরন্ত ঘূর্ণির) পরিবেশন করেছেন ‘সলিল’গীতি।
বিশিষ্ট শিল্পী তথা কিংবদন্তি সঙ্গীত পরিচালক সুধীন দাশগুপ্তের সুপুত্র সৌম্য দাশগুপ্ত সলিলসঙ্গীত পরিবেশন করেছেন গিটারে (দূর নয় বেশি দূর), সেতারে সলিল চৌধুরীর সুর তুলেছিলেন শিল্পী শৌভিক মুখোপাধ্যায় (সুরের ঝর্ণা), গিটারে রকেট মণ্ডল পরিবেশন করেন সলিলসঙ্গীত (চলে যে যায় দিন)। সলিল চৌধুরীর পৃষ্ঠপোষকতায় রুমা গুহঠাকুরতার উদ্যোগে গড়ে উঠেছিল ক্যালকাটা ইয়ুথ কয়্যার। এদিন সঙ্গীত পরিবেশন করেছিলেন তাঁদের শিল্পীরাও (পথে এবার নামো সাথী)।
বাংলা ব্যান্ডের জগতে দুই বিশেষ পরিচিত নাম ক্যাকটাস ও শহর। এদিন এই দুই গানের দলের প্রধান গায়ক সিধু (দিল তরপ তরপকে) এবং অনিন্দ্য বসুও (পাগল হাওয়া) গানের মধ্য দিয়ে শ্রদ্ধা জানান সলিল চৌধুরীকে। শিসধ্বনিতে তাঁকে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তরুণ গোস্বামী (মন মাতাল)।
মূল আয়োজক সুদীপ্ত চন্দ জানান, ‘যাঁরা রাস্তায় সঙ্গীত পরিবেশনের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহ করেন, এই অনুষ্ঠান সেইসকল সঙ্গীতশিল্পীর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি। একেবারে অন্যধরনের এই উৎসবকে জীবনের উদযাপন হিসাবেও বিবেচনা করা যেতে পারে।’

Author

  • Debasmita Biswas

    বেথুন কলেজ থেকে উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতক। পড়ার নেশা ছোট থেকে, প্রাথমিকভাবে লেখালেখির শুরু শখেই। তারপর সংবাদপত্র, পত্র-পত্রিকায় সমালোচনা পড়ার অভ্যাস আর বিভিন্ন নাটক, সিনেমা দেখার পর বিশ্লেষণ করার শখ থেকেই ইচ্ছে সমালোচক হওয়ার। বিনোদনজগতের বিভিন্ন খবর করার পাশাপাশি নাটক এবং সিনেমা দেখে তার গঠনমূলক সমালোচনাও করেন তিনি।

    View all posts
Scroll to Top