Entertainment

KLIKK MILKSHAKE MURDERS: ওয়েব সিরিজে ডেবিউ নীলের, সঙ্গে তৃণা, সৌরভও

বর্তমানসময়ের জনপ্রিয় ওটিটি প্ল্যাটফর্মগুলির মধ্যে অন্যতম একটি নাম ‘ক্লিক’। রহস্য, মনস্তত্ত্ব, সামাজিক, সবধরনের কাজই এই ওটিটি প্ল্যাটফর্মে দেখতে পান দর্শকেরা। বরাবরের মত, এবারেও এক অন্যরকম কাহিনী নিয়ে আসছে তারা। সিরিজের নাম ‘মিল্কশেক মার্ডার্স’, পরিচালনায় অর্ণব রিঙ্গো ব্যানার্জী ।

নাম শুনে অবাক হচ্ছেন তো? সেটাই স্বাভাবিক। নামের মত সিরিজের কাহিনীতেও আছে চমকের পর চমক। একেবারে অন্যধরনের প্লটের উপর ভিত্তি করে বোনা হয়েছে এই থ্রিলার সিরিজটির গল্প। সাহিত্যজগতের আলো-আঁধারি নিয়ে, এক আন্তর্জাতিক প্রকাশনা সংস্থার প্রেক্ষাপটে গড়ে উঠেছে কাহিনীটি।

থাইল্যান্ডের পাটায়াবাসী এক লেখক বহু চেষ্টা করেও, ব্যর্থ হন বড় প্রকাশককে দিয়ে বই ছাপাতে। বিরক্ত, হতাশাগ্রস্ত লেখক চলে যান নির্জন ফিফি দ্বীপে। ভাগ্যক্রমে সেই বিদেশের মাটিতে, ফিফির সমুদ্রতটে, হঠাৎ তিনি দেখা পান আরো এক বাঙালি লেখকের। দ্বিতীয় সেই ব্যক্তি লেখক হলেও, একটু পাগলাটে গোছের। কথায় কথায় প্রথমজন জানতে পারেন এই পাগলাটে ব্যক্তির প্রথম লেখা বইটি এক নামজাদা প্রকাশনা ছাপছে। যদিও, এখনো সেই পাণ্ডুলিপি জমা দেননি তিনি।

ঠিক এইখান থেকেই গল্প বাঁক নেয় অন্যদিকে। ব্যর্থ লেখককে পাণ্ডুলিপিটি পড়তে দিয়ে, সমুদ্রস্নানে নেমে নিরদ্দিষ্ট হয়ে যান সেই পাগলাটে ব্যক্তি। ‘বেওয়ারিশ’ সেই পাণ্ডুলিপি এবং মৃত ব্যক্তির পরিচিতি, দুটোই অবলীলাক্রমে আত্মসাৎ করেন প্রথমজন। হয়ে ওঠেন সর্বোচ্চ বিক্রিত লেখক। কিন্তু সাফল্যের চূড়ায় পৌঁছে দেওয়া সেই বইটির আসল পরিচয় নড়িয়ে দেয় তাঁকে। জানা যায়, কলকাতায় ঘটে যাওয়া বিভিন্ন খুন – যার খুঁটিনাটি শুধুমাত্র খুনী নিজেই জানে, তার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে এই বইতে!

কী হবে এরপর? ঠিক কীভাবে পাতা হয় ষড়যন্ত্রের ফাঁদ! সেইসব উত্তরের সঙ্গে এই ওয়েবসিরিজে পরিচালক তুলে ধরেছেন মনোজগতের দ্বন্দ্ব বনাম অস্ত্বিত্ব রক্ষার লড়াই। পরিচালনার পাশাপাশি সিরিজটির কাহিনী এবং চিত্রনাট্য লেখা, আবহসঙ্গীত, চিত্রগ্রহণ ও আরো বেশ কিছু দায়িত্ব একাই সামলেছেন রিঙ্গো।
তিনি জানান, ‘মিল্কশেক মার্ডারস একটি ব্যতিক্রমী থ্রিলার। যার চরিত্রগুলি আকস্মিক সাফল্যের খেলায় লিপ্ত হয়ে পড়ে। তারা শেষমেশে নিরাশা আর নিদারুণ যন্ত্রণার জালে জড়িয়ে পড়ে। প্রতিটি চরিত্র নিজের স্বার্থে একে অপরকে প্রয়োজনে ব্যবহার করে, প্রতিটি স্তরে প্রতারণা করতেও পিছুপা হয় না। আর তার ফল, শুধুই হতাশা, মানসিক উৎপীড়ন এবং সর্বোপরি জিঘাংসা। এই স্বার্থান্বেষী সময়ের দলিলটাকে থ্রিলারধর্মী রূপকের মাধ্যমেই তুলে আনার চেষ্টা করেছি।

তিনি আরো বলেন, ‘প্রথমবার ক্লিকের সাথে আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে কাজটা করে যথেষ্ট আনন্দ পেয়েছি। এর আগেও থাইল্যান্ডে আমি শ্যুটিং করেছি, কিন্তু এবারের শিডিউল এবং প্ল্যানিং এতটাই টাইট ছিল যে অত্যন্ত পরিণত অভিনেতা এবং বিচক্ষণ টীম না হলে কাজটা করাই যেত না।’ টিমের প্রত্যেককেই ধন্যবাদ জানিয়েছেন পরিচালক।

এই ওয়েবসিরিজের হাত ধরেই ওটিটিতে ডেবিউ করছেন অভিনেতা নীল ভট্টাচার্য্য। তিনি বলেন, ‘এই সিরিজটি খুব স্পেশাল এবং বিভিন্ন কারণে আমার হৃদয়ের খুব কাছাকাছি। স্ক্রিপ্ট পড়ার সময় থেকে শুরু করে, এক একটি দৃশ্য, সঙ্গীতের নিখুঁত বিবরণ পর্যন্ত, অর্ণব রিঙ্গো ব্যানার্জি পর্দায় জাদু তৈরি করেছেন।’

সিরিজে তাঁর সঙ্গে রয়েছেন সৌরভ দাস, তৃণা সাহা এবং জয়ী দেবরায়ও। ক্লিকের সঙ্গে সৌরভের তৃতীয় সিরিজ এটি। তিনি বলেন, ‘ফিচার ফিল্মের শ্যুটিং বিদেশে হয়, সেক্ষেত্রে এটা আমার প্রথম বিদেশে গিয়ে শ্যুট নয়, কিন্তু ওয়েব সিরিজের ক্ষেত্রে এটি আমার প্রথম বিদেশে গিয়ে শ্যুট।’
ক্লিকের সঙ্গে আগে কাজ করেছেন তৃণাও। ‘আমার প্রথম আন্তর্জাতিক লোকেশনে শ্যুট করা ওয়েব সিরিজ, ওয়েবসিরিজে আমার স্বামী নীলের সঙ্গে আমার প্রথম সহঅভিনেতার কাজ এবং তারপরে সৌরভের মত খুব ঘনিষ্ঠ বন্ধুর সাথে অভিনয়, এবং এইধরনের চরিত্রায়ণও প্রথমবার’, বলেছেন তৃণা।

প্রযোজক ঐন্দ্রিলা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘নতুন যুগের চিত্রগ্রহণ এবং চমকপ্রদ সম্পাদনা এই সিরিজটিকে অনন্য এবং আকর্ষণীয় করে তুলেছে। এই প্রথম আমরা, দুই ভাল বন্ধুকে – সৌরভ দাস এবং নীল ভট্টাচার্যকে একসাথে ওয়েব সিরিজে দেখতে পাবো। বিদেশী আবহাওয়ায় শ্যুটিংটি করা বেশ চাপের ছিল, তবে শেষ পর্যন্ত আমরা যেভাবে পরিকল্পনা করেছিলাম, সেভাবেই করেছি।’

ক্লিকের ডিরেক্টর নীরজ তাঁতিয়া ভরসা রেখেছেন রিঙ্গো এবং ঐন্দ্রিলার যৌথ উদ্যোগের উপর। ক্লিক ওটিটির প্রথম আন্তর্জাতিক স্তরে, দুর্দান্ত বিষয়ের উপর তৈরী এই ওয়েবসিরিজ শ্যুট করা হয়েছে থাইল্যান্ডে। নীল, তৃণা, সৌরভ, জয়ী ছাড়াও এই সিরিজে অভিনয় করছেন অলোক সান্যাল, তপস্যা দাসগুপ্ত, জয়ন্ত মন্ডল, রানা মুখার্জী, অগ্নিভ জুন ব্যানার্জী, অঙ্কিতা রায়, চয়ন দে, সহেলি মন্ডল প্রমুখ। রজত দলুইয়ের ভিএফএক্স এবং তীর্থঙ্কর মজুমদারের সাউন্ড ডিজাইনে প্রাণ পেয়েছে এই সিরিজ।

Author

  • Debasmita Biswas

    বেথুন কলেজ থেকে উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতক। পড়ার নেশা ছোট থেকে, প্রাথমিকভাবে লেখালেখির শুরু শখেই। তারপর সংবাদপত্র, পত্র-পত্রিকায় সমালোচনা পড়ার অভ্যাস আর বিভিন্ন নাটক, সিনেমা দেখার পর বিশ্লেষণ করার শখ থেকেই ইচ্ছে সমালোচক হওয়ার। বিনোদনজগতের বিভিন্ন খবর করার পাশাপাশি নাটক এবং সিনেমা দেখে তার গঠনমূলক সমালোচনাও করেন তিনি।

    View all posts

Debasmita Biswas

বেথুন কলেজ থেকে উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতক। পড়ার নেশা ছোট থেকে, প্রাথমিকভাবে লেখালেখির শুরু শখেই। তারপর সংবাদপত্র, পত্র-পত্রিকায় সমালোচনা পড়ার অভ্যাস আর বিভিন্ন নাটক, সিনেমা দেখার পর বিশ্লেষণ করার শখ থেকেই ইচ্ছে সমালোচক হওয়ার। বিনোদনজগতের বিভিন্ন খবর করার পাশাপাশি নাটক এবং সিনেমা দেখে তার গঠনমূলক সমালোচনাও করেন তিনি।