মিথিলার জন্মদিনে সুখবর, ৫০-এ পা ‘ও অভাগী’-র!

শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের লেখা ছোটগল্প ‘অভাগীর স্বর্গ’ অবলম্বনে একটি চলচ্চিত্র বানিয়েছেন পরিচালক অনির্বাণ চক্রবর্তী। মুক্তি পাওয়ার পরে সগৌরবে প্রেক্ষাগৃহে ছবিটি পার করে ফেলেছে পঞ্চাশদিন। সেই উপলক্ষ্যেই, মিথিলার জন্মদিনের দিন কলকাতার বাস এন্ড ব্যারেল পিয়ারলেস হোটেলে উদযাপন করলেন নির্মাতারা।

ইতিমধ্যেই, একাধিক বড় বড় পুরস্কার ঝুলিতে পুরেছে ‘ও অভাগী’। অষ্টম ‘Indian World Film Festival’-এ সেরা চলচ্চিত্র পুরস্কার, সপ্তম নয়াদিল্লি চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা চলচ্চিত্র এবং সেরা চিত্রনাট্য পুরস্কার, ১৪তম দাদাসাহেব ফালকে চলচ্চিত্র উৎসবে সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার জিতে নিয়েছে এই ছবি। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক স্তরের বিভিন্ন চলচ্চিত্র উৎসবেও মনোনয়ন পেয়েছে এই ছবি।

গল্পের মতই এ ছবির মধ্য দিয়ে ফুটে উঠেছিল ছয়-সাতের দশকের গ্রাম-বাংলার প্রতিচ্ছবি। নিম্নবিত্ত, নীচুজাতের স্বামী-পরিত্যক্তা এক মহিলা অভাগী। মৃত্যুর পরে ছেলে কাঙালি মুখাগ্নি করবে, এই ছিল তার স্বপ্ন। মৃত্যুর আগে সে কাঙালিকে সিঁদুর, আলতা আর পোড়ানোর কাঠ যোগাড় করতে বলে। কিন্তু আলতা-সিঁদুর পেলেও, দাহের কাঠ জোগাড় করতে পারে না কাঙালি।

সকলের কাছে তাকে শুনতে হয়, ‘নীচুজাতের মড়া’ পোড়ানোর দরকার হয় না, কবর দিলেই যথেষ্ট। সারাজীবন যে আগুনের স্বপ্ন দেখেছিল অভাগী, সে আগুন জ্বলতে থাকে তার বালক ছেলের চোখে। ছবির মুখ্য চরিত্র অভাগীর ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল রাফিয়াদ রশিদ মিথিলাকে। তাঁর পুত্র, কাঙালীর চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন সৌরভ হালদার। অভাগীর স্বামী রসিক বাঘের চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছিলেন সায়ন ঘোষ।

তাঁরা ছাড়াও, সুব্রত দত্ত, দেবযানী চট্টোপাধ্যায়, ঈশান মজুমদার, জিনিয়া পাণ্ডে, কৃষ্ণ ব্যানার্জীকে দেখা গিয়েছিল এই ছবিতে। ছবির সঙ্গীত পরিচালনা করেছেন মৌসুমী চ্যাটার্জী।

ক্যামেরার দায়িত্বে ছিলেন মলয় মণ্ডল, সম্পাদনার দায়িত্ব ছিল সুজয় দত্তরায়ের হাতে। পঞ্চাশদিনের উদযাপনে সমগ্র টিমকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন পরিচালক।

তিনি বলেন, ‘আমরা হাফ সেঞ্চুরি করে ফেলেছি ইতিমধ্যেই, এখন সেঞ্চুরির দিকে তাকিয়ে। সেঞ্চুরি করলে এর দ্বিগুণ উদযাপন করা হবে সেদিন।’ তবে মিথিলা পার্টিতে উপস্থিত থাকতে না পারায় দুঃখপ্রকাশও করেছেন তিনি।

পাশাপাশি তিনি ধন্যবাদ জানিয়েছেন প্রযোজক প্রবীর ভৌমিককেও। পেশায় শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রযোজক প্রবীর ভৌমিকের কথায়, ‘শ্রেণীবৈষম্য, দারিদ্র্য, শোষণের এই কাহিনী লেখা হয়েছিল আজ থেকে ১০০ বছর আগে। আর এখনো সেটা সমানভাবে প্রাসঙ্গিক।’

পরিচালক-প্রযোজকসহ সাফল্যের এই পঞ্চাশদিনের জমজমাট উদযাপনে মেতেছেন ‘ও অভাগী’র সম্পূর্ণ টিমই। দর্শকদের ভালবাসায়, বিনা বাধায় এই ছবি একশো দিনের মাইলফলক ছুঁতে পারে কিনা, সেটাই এখন দেখার।

Author

  • Debasmita Biswas

    বেথুন কলেজ থেকে উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতক। পড়ার নেশা ছোট থেকে, প্রাথমিকভাবে লেখালেখির শুরু শখেই। তারপর সংবাদপত্র, পত্র-পত্রিকায় সমালোচনা পড়ার অভ্যাস আর বিভিন্ন নাটক, সিনেমা দেখার পর বিশ্লেষণ করার শখ থেকেই ইচ্ছে সমালোচক হওয়ার। বিনোদনজগতের বিভিন্ন খবর করার পাশাপাশি নাটক এবং সিনেমা দেখে তার গঠনমূলক সমালোচনাও করেন তিনি।

    View all posts
Scroll to Top