যে কনসার্ট দেখতে কেবল অন্য জেলা থেকে নয়, মানুষ ছুটে আসেন ভিনরাজ্য থেকে, সেই শো যে মঞ্চে আগুন জ্বালাবে, তা আর আশ্চর্য কী! গতকাল রূপম ইসলামের ‘একক’ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল নজরুল মঞ্চে। বরাবরের মত, এবারেও মঞ্চ থেকে সংহতির বার্তা দিলেন বাঙালির হৃদয়ের রকস্টার।
যদি প্রশ্ন করা হয়, ‘থ্রি ইডিয়টস’ দেখেছেন? অধিকাংশ উত্তর আসবে ইতিবাচক। তাহলে নিশ্চয়ই র্যাঞ্চোকে চেনেন? এবার প্রশ্নকর্তার মানসিক স্থিতি নিয়ে সন্দেহ হবে কিছুটা। মুখ চেপে একটু হাসাহাসিও চলতে পারে। কিন্তু বিষয় হল, পর্দার র্যাঞ্চোর কথা কিন্তু জিজ্ঞেস করাই হয়নি! জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, ‘বাস্তবের র্যাঞ্চো’ সোনম ওয়াংচুকের কথা। এবার ভ্রুযুগলে ভাঁজ পড়ছে তো?
লাদাখের পরিবেশ বাঁচানো-সহ কয়েকটি দাবির সপক্ষে কুড়িদিনেরও বেশী সময় অনশন করেছেন সোনম ওয়াংচুক। যে ক’দিন তিনি অনশন করতে পারছেন না, সেই ক’দিনও তাঁর অনুগামীরা অনশন চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। অথচ এরপরেও, অদ্ভুতভাবে, খবরের শিরোনামে আসা তো দূর, অন্যান্য খবরের তলায় চাপা পড়ে যাচ্ছে তাঁর নাম।
ঠিক এই বিষয়টাই রূপম তুলে ধরেছেন তাঁর গতকালের ‘একক’ অনুষ্ঠানে। যাঁর খবর করতে এতটা অবহেলা করছে প্রতিষ্ঠিত সংবাদপত্রগুলো, তাঁর কথা মুক্তমঞ্চে দাঁড়িয়ে বলার জন্য সৎ-সাহস দরকার। আর সেই সাহসের, সেই বুকের পাটার অস্তিত্বের প্রমাণ আবারও দিলেন রূপম।
এবারই প্রথম নয়, এর আগেও ‘একক’-এর মঞ্চে দাঁড়িয়ে, এক ব্যক্তিকে বিনাবিচারে কারারুদ্ধ করে রাখার বিরুদ্ধে কথা বলেছিলেন রূপম। তাঁকে অন্তত বিচারাধীন করতে অনুরোধ করেছিলেন রাষ্ট্রকে। কিন্তু পরিবর্তে তীব্রভাবে সমালোচিত হয়েছিলেন গায়ক, বিদ্ধ হয়েছিলেন কটু আক্রমণবাক্যে। তা সত্ত্বেও ফের একবার, মঞ্চ থেকে সোনমকে সংহতি জানালেন রূপম। মঞ্চে দাঁড়িয়ে রূপম বলেন, ‘আমি সংহতি জানালে তাঁর কাজে কোনো সুবিধা হবে না। কিন্তু এ নিয়ে একটু কথা তো হবে!’
বেথুন কলেজ থেকে উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতক। পড়ার নেশা ছোট থেকে, প্রাথমিকভাবে লেখালেখির শুরু শখেই। তারপর সংবাদপত্র, পত্র-পত্রিকায় সমালোচনা পড়ার অভ্যাস আর বিভিন্ন নাটক, সিনেমা দেখার পর বিশ্লেষণ করার শখ থেকেই ইচ্ছে সমালোচক হওয়ার। বিনোদনজগতের বিভিন্ন খবর করার পাশাপাশি নাটক এবং সিনেমা দেখে তার গঠনমূলক সমালোচনাও করেন তিনি।