সম্প্রতি নিউ ইয়র্কে ছিল বাংলা চলচ্চিত্রের এক দুর্দান্ত উৎসব। ‘Suchitra Sen Memorial USA’-এর উদ্যোগে, গত ২০ ও ২১শে এপ্রিল অনুষ্ঠানটি আয়োজিত হয়েছিল জ্যামাইকা পারফরমিং আর্টস সেন্টারে। দু’দিনব্যাপী চলা এই উৎসবের দ্বিতীয় তথা শেষদিন পুরস্কার দেওয়া হল ভারত, বাংলাদেশ ও এই দুই দেশের অভিবাসী বিভাগের মোট ৩১জন শিল্পীকে।
আর এই ‘সুচিত্রা সেন আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’-এই সেরা অভিনেতার শিরোপা পেলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। অতনু ঘোষ পরিচালিত ‘শেষ পাতা’ ছবিতে অভিনয়ের জন্যই তিনি পেয়েছেন এই পুরস্কার।
বর্তমানে যে ক’জন অভিনেতা অভিনেত্রীর নাম প্রথমসারিতে রাখেন সমালোচকরা, তাঁদের মধ্যে অন্যতম প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। ‘শেষ পাতা’ ছবিতে তাঁর চরিত্রটি ছিল এক লেখকের। যদিও লেখক হলেও নিঃসঙ্গ বাল্মিকী ভুগছিলেন ‘রাইটার্স ব্লক’ সিনড্রোমে। স্ত্রী’র অস্বাভাবিক মৃত্যু তাঁকে ঠেলে দিয়েছিল আরো অন্ধকার জীবনের দিকে।
অতনু ঘোষ পরিচালিত এই ছবিতে একেবারে অন্যরকম চরিত্রে নজর কেড়েছিলেন প্রসেনজিৎ চট্টোপাধ্যায়। সমালোচকমহলে যথেষ্ট প্রশংসাও কুড়িয়েছিলেন তিনি। তাই তাঁর এই পুরস্কারপ্রাপ্তিতে অত্যন্ত আনন্দিত ভক্তেরা।
তবে আনন্দের সংবাদ শেষ নয় এখানেই। এই চলচ্চিত্র উৎসবে তাঁর সঙ্গে যৌথভাবে এই পুরস্কার পেয়েছেন আরো এক জনপ্রিয় অভিনেতা-পরিচালক। তিনি কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়। ‘আরো এক পৃথিবী’ ছবির জন্য পুরস্কার পেয়েছেন তিনি। ঘটনাচক্রে, সেই ছবিটিও পরিচালনা করেছেন অতনু ঘোষ।
এছাড়া, বাংলাদেশ থেকে সেরা অভিনেতার পুরস্কার পেয়েছেন চঞ্চল চৌধুরী। সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কার পেয়েছেন নাজিফা তুষি (বাংলাদেশ), পায়েল সরকার (ভারত) ও সিন্ডি রোলিং (অভিবাসী)। শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র পুরস্কার পেয়েছে হাওয়া (বাংলাদেশ), দোআঁশ (ভারত) ও রেডিও (অভিবাসী)।
প্রসেনজিত চট্টোপাধ্যায় এবং কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের এই যৌথ সম্মানলাভে খুশী ভক্তেরা। সম্প্রতি কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি ছবিতে কাজ করেছেন প্রসেনজিত চট্টোপাধ্যায়। এই ছবিটি তাঁর কেরিয়ারের অন্যতম মাইলফলক হতে চলেছে। কারণ, এই ছবিতেই, বিশ্ব চলচ্চিত্রের ইতিহাসে প্রথমবার কোনো অভিনেতা-অভিনেত্রী পঞ্চাশতম কাজ করতে চলেছেন জুটি হিসেবে।
আগামী জুন মাসেই বড়পর্দায় আসবে সেই ছবি। তার আগে এই সম্মানলাভ যে সত্যিই এক বড় প্রাপ্তি, এ নিয়ে কি আর দ্বিমত থাকতে পারে!
বেথুন কলেজ থেকে উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতক। পড়ার নেশা ছোট থেকে, প্রাথমিকভাবে লেখালেখির শুরু শখেই। তারপর সংবাদপত্র, পত্র-পত্রিকায় সমালোচনা পড়ার অভ্যাস আর বিভিন্ন নাটক, সিনেমা দেখার পর বিশ্লেষণ করার শখ থেকেই ইচ্ছে সমালোচক হওয়ার। বিনোদনজগতের বিভিন্ন খবর করার পাশাপাশি নাটক এবং সিনেমা দেখে তার গঠনমূলক সমালোচনাও করেন তিনি।