বাঙালির প্রাণের ঠাকুরের জন্মদিনে তাঁকে নানাভাবে শ্রদ্ধা জানান সকলেই। গান, নাচ, আবৃত্তিতে ভরে থাকে গোটা ‘রবি’বার। তবে তাঁর ১৬৩-তম জন্মবার্ষিকীতে নতুন যন্ত্রসঙ্গীতের ‘Ode to My Beloved’ কিন্তু হেঁটেছে একেবারেই অন্যপথে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পাঁচটি কম্পোজিশন এবং একটি তিলোককামোদ রাগাশ্রয়ী গানের উপর তৈরী হয়েছে এই অ্যালবাম। সায়নদীপ রায়, মেঘদূত রায়চৌধুরী এবং সত্রাজিৎ সেন প্রযোজিত, কৃষ্ণ কয়াল এবং ব্লুপার হাউস প্রোডাকশন নিবেদিত এই অ্যালবামটিকে নতুন মাত্রা দিয়েছে সঙ্গের মিউজিক ভিডিওটি। এই অনন্য শ্রদ্ধার্ঘ্যটি আবেগ, ভালবাসা, কামনা, বাসনাকে ছুঁয়ে গিয়েছে নির্মলভাবে।
কবিগুরুর লেখা ‘ভালবেসে সখী’ গানের এই মিউজিক ভিডিওর ভাবনার কারিগর সত্রাজিৎ সেন। সঙ্গীত পরিচালনার ভার ছিল সায়নদীপ রায়ের হাতে। এছাড়া ম্যান্ডোলা, গিটার প্রভৃতি বাদ্যযন্ত্রের সুরের মূর্ছনায় তিনি স্পর্শ করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে। এখানে কিবোর্ডের দায়িত্বে ছিলেন দীপায়ন মিত্র, ড্রামের দায়িত্বে ছিলেন অনিরুদ্ধ মণ্ডল এবং তবলা ও পারকাশনের দায়িত্বে ছিলেন অর্ক ব্যানার্জী। কবিগুরু বিশ্বাস করতেন, রক্তমাংসের এই বাস্তব পৃথিবীতে আবেগের মৃত্যু হয় না। সেই অমরত্বের ছোঁয়াও হয়ত মিউজিক ভিডিওতে পাবেন দর্শক-শ্রোতারা।
রবিগানের যন্ত্রসঙ্গীতের এই মিউজিক ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে সত্রাজিৎ সেন এবং রিচা শর্মাকে। অভিনেত্রী রিচা শর্মা এই প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘এই কাজটার অংশ হতে পেরে আমি সত্যি সম্মানিত বোধ করছি। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিরকালীন কাজগুলোকে উদযাপন করা হয়েছে এই কাজটার মধ্য দিয়ে। পুরোটাই সম্ভব হয়েছে সত্রাজিতের ভাবনার জন্য। সেলিম সুলাইমান এই মিউজিক ভিডিও লঞ্চ করেছে, সেজন্যও আমরা কৃতজ্ঞ।’
সত্রাজিৎ সেন জানান, ‘রবিঠাকুরের গান সবসময়েই আমার মনে একটা বিশেষ জায়গা নিয়ে ছিল। তাঁর কম্পোজিশনগুলোর মধ্যে আবেগের যে গভীরতা আছে, সেটাকে এই যন্ত্রসঙ্গীতের মধ্য দিয়ে খুঁজে বের করার চেষ্টা করেছি আমরা। আমার ভাবনাটাকে বাস্তবরূপ দেওয়ার জন্য টিমকে ধন্যবাদ। তাছাড়া, এই অন্যধাঁচের যন্ত্রসঙ্গীতের আয়োজনকে নিজেদের মঞ্চে জায়গা দেওয়ার জন্য আমরা সেলিম সুলাইমানের কাছেও কৃতজ্ঞ।’
ঋত্বিক সিনহা এবং অর্ঘ্য কয়ালের ভাবনায় তৈরী হয়েছে মিউজিক ভিডিওটি। নাচের কোরিওগ্রাফি করেছেন অভিরূপ সেনগুপ্ত। রবীন্দ্ররচনাকে এমন অন্যরকম উপায়ে দর্শক-শ্রোতাদের কাছে তুলে ধরার এই প্রয়াস সত্যিই বিরল। আর এই বিরল সম্মান হয়ত কেবল তাঁরই প্রাপ্য, কোনো তোষামোদ না করেও, অনায়াসে যিনি বাংলাভাষাকে তুলে নিয়ে গিয়েছিলেন বিশ্বের দরবারে!
বেথুন কলেজ থেকে উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতক। পড়ার নেশা ছোট থেকে, প্রাথমিকভাবে লেখালেখির শুরু শখেই। তারপর সংবাদপত্র, পত্র-পত্রিকায় সমালোচনা পড়ার অভ্যাস আর বিভিন্ন নাটক, সিনেমা দেখার পর বিশ্লেষণ করার শখ থেকেই ইচ্ছে সমালোচক হওয়ার। বিনোদনজগতের বিভিন্ন খবর করার পাশাপাশি নাটক এবং সিনেমা দেখে তার গঠনমূলক সমালোচনাও করেন তিনি।