বাবার জন্মদিনে উৎসব, ‘পুণ্য করে এমন মা-বাবা পেয়েছি’: মমতা শঙ্কর
গতকাল, ৮ই ডিসেম্বর ছিল কিংবদন্তি নৃত্যশিল্পী উদয় শঙ্করের জন্মদিন। জমজমাট নৃত্যোৎসবের মাধ্যমে শান্তিনিকেতনে উদযাপিত হল এই বিশেষ দিনটি। দু’দিন ধরে চলেছে এই উৎসব।
শিল্পী উদয় শঙ্করের নাচের অনুরাগী এখনো নেহাত কম নয়। কেবল উদয় শঙ্কর নন, তাঁদের পুরো পরিবারই নাচের জগতে স্বমহিমায় উজ্জ্বল। উদয় শঙ্করের কন্যা মমতা শঙ্কর নিজেও একজন দক্ষ, স্বনামধন্য নৃত্যশিল্পী। বাবার জন্মদিন উপলক্ষ্যে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তিনিও। ইস্টার্ন জোনাল কালচারাল সেন্টারের সহায়তায়, ওয়েস্টবেঙ্গল ডান্স গ্রুপ ফেডারেশনের আয়োজনে অনুষ্ঠিত হয়েছে দু’দিনব্যাপী এই উৎসব।
গত দু’বছরও শিল্পীকে শ্রদ্ধা জানিয়ে আয়োজিত হয়েছিল ‘আলমোরা (দুইদিনের উদয় শঙ্কর নৃত্য উৎসব)’। পরপর দু’বছরের সাফল্যের পর, এবার ৬ ও ৭ই ডিসেম্বর শান্তিনিকেতনের সৃজনী শিল্পগ্রামে আয়োজিত হয়েছিল এই অনুষ্ঠান। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মমতা শঙ্কর স্বয়ং। তিনি ছাড়াও সেদিন উপস্থিত ছিলেন পার্বতী গুপ্ত, চন্দ্রোদয় ঘোষ, জোনাকি সরকার, প্রদীপ্ত নিয়োগী, অমিত অধিকারী প্রমুখ।
রাজ্যের নানাপ্রান্ত থেকে মোট চব্বিশটা নৃত্য সংগঠন এই উৎসবে অংশগ্রহণ করেছিল। কলকাতাসহ বিভিন্ন জেলার নৃত্য সংস্থা ছিল সেই তালিকায়। উৎসবের প্রথমদিন অংশগ্রহণ করেছিল মমতা শঙ্কর ডান্স কোম্পানি, ডান্সার্স গিল্ড, আনন্দধারা, শিল্প বিতান, সূচনা-সহ আরো বেশ কিছু দল। দ্বিতীয়দিন ওয়েস্ট বেঙ্গল ডান্স গ্রুপ ফেডারেশন, নৃত্য উপাসনা, আনন্দধ্বনি, স্টেপস এন্ড রিদম-সহ আরো অনেক দল অংশগ্রহণ করেছে এই উৎসবে।
পরপর তিনবছরই শান্তিনিকেতনে অনুষ্ঠিত হয়েছে এই নৃত্যোৎসব। তবে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, আগামী দিনে ফেডারেশনের এই উদ্যোগ আরো জেলায় নিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা আছে তাঁদের। শ্রীমতী মমতা শঙ্কর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জানান, ‘কলকাতার বাইরেও ওয়েস্ট বেঙ্গল ডান্স গ্রুপ ফেডারেশনের কাজের প্রচার, প্রসার এর অন্যতম প্রধান লক্ষ্য। কলকাতার বাইরেও অনেক গুণী শিল্পী আছেন, অনেক নৃত্য সংস্থা আছে, যাঁরা সবসময় কলকাতায় এসে তাঁদের অনুষ্ঠান করতে পারেন না। আবার কলকাতার অনেক সংস্থা আছে যাঁরা কলকাতার বাইরে গেলে সেখানকার দর্শক তাঁদের কাজ দেখার সুযোগ পান। তাই, কলকাতার বাইরেও এই আয়োজনের গুরত্ব অপরিসীম।’
ছোট থেকেই ঋদ্ধ সাংস্কৃতিক পরিবেশে বড় হয়েছেন মমতা শঙ্কর। পেয়েছেন বাবা-মায়ের পূর্ণ সমর্থন। এদিন তিনি বলেন, ‘ছেলেবেলায় বাবার অনুষ্ঠান সাইড উইংসে বসে বাবার নাচ দেখতাম। কোনো গ্রাম্য দৃশ্য থাকলে বাবা আমায় কোলে নিয়ে মঞ্চে একপাক ঘুরে নিতেন। অভিনয়টা বাবার থেকেই পেয়েছি। ছোটোবেলায় কোনোকিছু ভাল লাগছে না বললে বাবা বলতেন, এই কথাটা কতরকমভাবে বলতে পারো বলো। ওটা ছিল একটা এক্সারসাইজ। আমি খুব পুণ্য করেছিলাম গত জন্মে, যে এরকম বাবা-মাকে পেয়েছিলাম।’