নিজের কাজের সূত্রেই বারংবার শিরোনামে এসেছেন তিনি। এপার বাংলা ছবি হোক বা ওপার বাংলার, দক্ষিণী ছবি হোক বা অসমের ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, সবেতেই স্বমহিমায় উজ্জ্বল তাঁর কোম্পানির নাম। এবার এক অন্যধরনের উদ্যোগ নিয়ে ফের শিরোনামে এলেন তাঁরা।
এতক্ষণে নিশ্চয়ই অনেকেই চিনতে পেরে গিয়েছেন, কার কথা বলা হচ্ছে! হ্যাঁ, তিনি একতা ভট্টাচার্য্য, আর কোম্পানির নাম ‘একতা ক্রিয়েটিভ টেলস’। তবে কেবলই পেশাগত কারণে নয়, অন্যান্য কারণেও মাঝেমধ্যেই চর্চায় থাকেন একতা। আমফান এবং কোভিডের সময়েও বিভিন্নরকম উদ্যোগ নিতে দেখা গিয়েছিল তাঁকে। আবার কিছুদিন আগেই, তাঁর ‘বাবি’, অর্থাৎ বাঙালির চিরসবুজ পরিচালক প্রভাত রায়ের প্রসঙ্গে বারবার উঠে আসছিল তাঁর কথা। আর এবার তেমনই জানা গেল তাঁর এক অভিনব উদ্যোগের কথা।
একটা বয়সের বহু মানুষকেই ত্যাগ করে তাঁদের পরিবার। বয়স্ক মানুষগুলোকে দেখভাল করার জন্য কেউ তো থাকেই না, বরং নিজেদের জীবিকার চাহিদা মেটাতে তাঁদের খুঁজতে হয় কাজ। লোকাল ট্রেনে, ফুটপাথে তাঁরা মিষ্টি, বাদাম ইত্যাদি বিক্রি করে উপার্জন করেন নিজেদের সংস্থান। ঠিক সেই জায়গাতেই দাঁড়িয়ে আছে একতার নতুন উদ্যোগ।
কীভাবে শুরু এমন ভাবনার? 71/1 MB-র ওয়েবসাইটের তরফ থেকে বিশদে জানতে যোগাযোগ করা হয়েছিল একতার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘খুব ছোটবেলা থেকেই বয়স্কদের লোকাল ট্রেনে, ট্রাফিক সিগন্যালে বা বাসে যখন কিছু বিক্রি করতে দেখতাম, আমার মনটা খুব খারাপ হয়ে যেত। বিগত বেশ কিছু বছর ধরে আমরা সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রায়শই দেখি, কত বয়স্ক মানুষ ট্রেনে, রাস্তায় এই রোদের মধ্যে কতকিছু বিক্রি করছে। তখন আমার মনে হল, যে এখন যখন আমার সামান্য কিছু সামর্থ্য আছে, তো সেইটুকু দিয়ে আমি এঁদের খেয়াল রাখতে পারব না কেন!’
গতকাল নিজের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট থেকে একটি পোস্ট করেন তিনি। নববর্ষের শুরুতেই গ্রীষ্মের বৈশাখী তেজে মানুষের অবস্থা খারাপ। ফেসবুকের পোস্টে একতা জানান, এই প্রচণ্ড গরমের হাত থেকে বাঁচাতে আগামী দু’মাস ‘একতা ক্রিয়েটিভ টেলস’ পাশে দাঁড়াবে এই ‘পরিত্যক্ত’, আর্থিকভাবে দুর্বল, বয়স্ক মানুষদের। তাঁদের জন্য ‘বাড়ি’র ব্যবস্থা করবেন একতা এবং তাঁর টিম। কেবল তাই-ই নয়, আশপাশের মানুষের কাছেও এইধরনের মানুষদের খবর জানানোর আবেদন করেছেন একতা। ‘এঁদের অনেকেরই সন্তান রয়েছে বা নেই। কিন্তু যাঁদের সন্তান রয়েছে, তাঁদের ক্ষেত্রে বিষয়টা আরো দুর্ভাগ্যজনক।’, 71/1 MB-র ওয়েবসাইটকে জানান তিনি।
এই ব্যস্ততা আর স্বার্থপরতার যুগেও, একেকটা ভাল উদ্যোগ আশা যোগায় আমাদের। একতার এই উদ্যোগে হয়ত ‘বাড়ি’ খুঁজে পাবেন অনেক মানুষ! আর কে না জানে, ভালবাসা থাকলে সেই বাড়ি ‘ঘর’ হতে সময় লাগে মোটে কয়েকমুহূর্ত।
বেথুন কলেজ থেকে উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতক। পড়ার নেশা ছোট থেকে, প্রাথমিকভাবে লেখালেখির শুরু শখেই। তারপর সংবাদপত্র, পত্র-পত্রিকায় সমালোচনা পড়ার অভ্যাস আর বিভিন্ন নাটক, সিনেমা দেখার পর বিশ্লেষণ করার শখ থেকেই ইচ্ছে সমালোচক হওয়ার। বিনোদনজগতের বিভিন্ন খবর করার পাশাপাশি নাটক এবং সিনেমা দেখে তার গঠনমূলক সমালোচনাও করেন তিনি।