গত ১৪ই মে শুরু হয়েছিল ‘কান চলচ্চিত্র উৎসব’। শেষ হয়েছে গত ২৫শে মে। প্রতি বছরই হলিউড থেকে বলিউড, সব ইন্ডাস্ট্রির তারকাদেরই দেখা যায় রেড কার্পেটে। বিশেষত, বলিউড তো বেশ জাঁকিয়েই নিজের জায়গা করে নিচ্ছে এই চলচ্চিত্র উৎসবে। প্রিয়াঙ্কা চোপড়া থেকে ঐশ্বর্য রাই – কখনো না কখনো দেখা গিয়েছে সকলকেই।
বলিউডের সিনেমাও সমাদৃত হয়েছে ‘কান’-এর মঞ্চে। কিন্তু এবারে ঘটেছে এক ব্যতিক্রমী ব্যাপার। কেবল বলি-হলির তারকারা নন, ‘কান’-এর আসরে এবার দেখা মিলেছে আরো কিছু বিখ্যাত মানুষের। সোশ্যাল মিডিয়া জুড়ে দাপটের সঙ্গে কাজ করে চলেছেন যাঁরা, সেই ইনফ্লুয়েন্সারদেরও দেখা গিয়েছে ‘কান’-এর মঞ্চে। ভারত থেকে যে অভিনেতা-অভিনেত্রীর বাইরেও ইনফ্লুয়েন্সারদের দেখা যাচ্ছে, একদিক থেকে তা বেশ গর্বের হলেও, সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট হওয়া একটি ভিডিও প্রশ্ন তুলে দিয়েছে তাঁদের উপস্থিতির বিষয়ে।
কিছু তথ্য নিয়ে তৈরী একটি ভিডিও পোস্ট করা হয়েছে ইনস্টাগ্রামে, আর পোস্ট করার সঙ্গে সঙ্গেই একরকম ভাইরাল হয়ে গিয়েছে তা। যদিও এসব তথ্য যাচাই করেনি 71/1 MB। সেই ভিডিওতে জানানো হচ্ছে, ‘কান চলচ্চিত্র উৎসব’-এর কর্তৃপক্ষ নাকি আদৌ নিমন্ত্রণ করে না কোনো ইনফ্লুয়েন্সারদেরকেই!
সম্প্রতি এক সূত্র মারফত জানা গিয়েছে এমনই এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। জানা গিয়েছে, কোনো ইনফ্লুয়েন্সার, এমনকি ন্যান্সি ত্যাগীও নাকি নিমন্ত্রণপত্র পাননি অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তাদের কাছ থেকে। বরং ‘কান’-এর মঞ্চে পৌঁছনোর জন্য নিজের পকেটের পয়সাই খরচ করতে হয় তাঁদের।
সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, শরন হেগড়ে এবং রাজ শামানির মত ‘কন্টেন্ট ক্রিয়েটর’রা ‘কান’-এর একটি টিকিট কিনতে খসিয়েছেন বাইশ থেকে পঁয়ত্রিশ লাখ টাকা। হাসির ভিডিও তৈরীর জন্য বিখ্যাত বিষ্ণু কৌশল খরচ করেছেন লাখপঁচিশেক। কেবল রেড কার্পেটে হাঁটার জন্য এত বিশাল পরিমাণের খরচের কথা জেনে মধ্যবিত্তের চোখ কপালে ওঠাই স্বাভাবিক।
এমনকি কিছু রেট কার্ড অবধি সোশ্যাল মিডিয়াতে ঘুরছে। যেখানে এক একদিনের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য টাকার অঙ্ক ১৫ থেকে ২৫ লক্ষ টাকার মধ্যে ঘুরপাক খাচ্ছে। এই যেমন চোপার্ড পার্টি এবং আফটার পার্টিতে প্রবেশের জন্য ১৫ লক্ষ টাকা নাকি দিতে হবে! কিংবা ভিআইপি ফ্যাশন শো তে প্রবেশের জন্য চাওয়া হয়েছে ১২ লক্ষ ৭৫ হাজার টাকা।
কিছু ক্রিয়েটার সেই রেট কার্ড দেখে সেই টাকার অঙ্কটা যুক্তিসঙ্গত বলেছেন। হতেই পারে এই টাকার বিনিময়ে যেই লাইমলাইট হাতছানি দিচ্ছে, সেই সুযোগটা কেউ হাতছাড়া করতে চাইছেন না। এমনও শোনা যাচ্ছে, যাঁরা যাঁরা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন, তাঁদের এখন গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধি পেয়েছে এবং তার সাথে বেড়েছে তাঁদের পারিশ্রমিক। ফলে এই গোটা বিষয়টা বাণিজ্যিকভাবে একটা অন্য মাত্রা পেয়েছে। সেই ছবিতে টাকার অঙ্কের শূন্য গুনতে গুনতে কিছু মানুষের মন্তব্য, ‘সবই ব্যবসা।’ তবে তাঁদের এই টিকিট কেনার বিষয়টিকে সমর্থনও করেছেন অনেকে। বলেছেন, ‘তাঁদের টাকায় তাঁরা যা খুশী করতেই পারেন।’
তবে সমর্থন করা হোক, আর না-ই হোক, ‘কান’-কর্তৃপক্ষ যে কাউকে নিমন্ত্রণ করে না, এ তথ্য নতুন সকলের কাছেই। তাই স্বাভাবিকভাবেই টাকার অঙ্ক দৃষ্টি কেড়েছে সকলের। ইনফ্লুয়েন্সারদের এই তথ্য যদি সত্যি হয়, তাহলে একটা প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে সকলের মনেই। তারকারা যে রেড কার্পেটে হাঁটেন, তাঁদেরও কি সম্মুখীন হতে হয় কোনো শর্তের? উত্তর জানা নেই কারোর।
বেথুন কলেজ থেকে উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতক। পড়ার নেশা ছোট থেকে, প্রাথমিকভাবে লেখালেখির শুরু শখেই। তারপর সংবাদপত্র, পত্র-পত্রিকায় সমালোচনা পড়ার অভ্যাস আর বিভিন্ন নাটক, সিনেমা দেখার পর বিশ্লেষণ করার শখ থেকেই ইচ্ছে সমালোচক হওয়ার। বিনোদনজগতের বিভিন্ন খবর করার পাশাপাশি নাটক এবং সিনেমা দেখে তার গঠনমূলক সমালোচনাও করেন তিনি।