O Abhagi: অনির্বাণের কলমের আঁচড়ে ‘শরৎ’ আসছে মার্চেই

ক্লাসিক সাহিত্যের কথা উঠলে যে বাঙালি লেখক-লেখিকার নাম সবার আগে মনে পড়ে, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় তাঁদের মধ্যে অন্যতম। উপন্যাস হোক বা ছোটগল্প, সবেতেই সমানভাবে হৃদয় নিংড়ে আবেগ ছড়িয়ে দিতেন তিনি।

তাঁর লেখা নিয়ে বহু চলচ্চিত্র হয়েছে এর আগেও। গতবছরই জানা গিয়েছিল, তাঁর লেখা ছোটগল্প ‘অভাগীর স্বর্গ’ অবলম্বনে একটি চলচ্চিত্র বানাতে চলেছেন পরিচালক অনির্বাণ চক্রবর্তী। সম্প্রতি মুক্তি পেল তার পোস্টার।

প্রবীর ভৌমিক প্রযোজিত এই ছবির মুখ্য চরিত্র অভাগীর ভূমিকায় দেখা যাবে দুই বাংলার জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাফিয়াদ রশিদ মিথিলাকে। তাঁর পুত্র, কাঙালীর চরিত্রে অভিনয় করবেন সৌরভ হালদার। গল্পের মতই এ ছবির মধ্য দিয়ে ফুটে উঠবে ছয়-সাতের দশকের গ্রাম-বাংলার প্রতিচ্ছবি।

নিম্নবিত্ত, নীচুজাতের স্বামী-পরিত্যক্তা এক মহিলা অভাগী। কিন্তু ছোটবেলায় গ্রামের এক যাত্রাপালায় যমরাজকে দেখে ভারী ভাল লেগেছিল তার। ‘দাহের পর কেবল সচ্চরিত্রা নারীরাই স্বর্গে স্থান পায়’, তাঁর এইধরনের কথাগুলো মনে গেঁথে গিয়েছিল অভাগীর। মৃত্যুর পরে ছেলে কাঙালি মুখাগ্নি করবে, এই ছিল তার স্বপ্ন। মৃত্যুর আগে সে কাঙালিকে সিঁদুর, আলতা আর পোড়ানোর কাঠ যোগাড় করতে বলে। আলতা-সিঁদুর পেলেও, দাহের কাঠ জোগাড় করতে পারে না কাঙালি। সকলের কাছে তাকে শুনতে হয়, ‘নীচুজাতের মড়া’ পোড়ানোর দরকার হয় না, কবর দিলেই যথেষ্ট। সারাজীবন যে আগুনের স্বপ্ন দেখেছিল অভাগী, সে আগুন জ্বলতে থাকে তার বালক ছেলের চোখে।

এইছবির সংলাপ ও চিত্রনাট্য লিখেছেন পরিচালক অনির্বাণ। তিনি বলেন, ‘শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিটা গল্প-উপন্যাসই যেন সিনেমার চিত্রনাট্য, আর সেজন্যই উনি আমার প্রিয়। মূল লেখায় যেসকল চরিত্র আছে, তাদের সঙ্গে আরো কিছু নতুন চরিত্র যোগ করা হয়েছে। মূল গল্পের নির্যাসটা নষ্ট না করে, নতুনধরনের কিছু বানানোটাই ছিল একটা চ্যালেঞ্জ।’ আসলে সতী হওয়ার বাসনা আর সমাজের জাতিভেদের এক অসম যুদ্ধ ফুটে উঠবে এই ছবিতে।

মিথিলা আর সৌরভ ছাড়াও, সুব্রত দত্ত, দেবযানী চট্টোপাধ্যায়, ঈশান মজুমদার, সায়ন ঘোষ, জিনিয়া পাণ্ডে, কৃষ্ণ ব্যানার্জীকে দেখা যাবে এই ছবিতে। পরিচালকের মতে, ছবিটা বানানোর সবচেয়ে আকর্ষণীয় অংশ ছবিটির শ্যুটিংয়ের সময়টা। সব কলাকুশলীরা তাঁদের সেরাটা দিয়েছেন। শ্যুটিং শেষের দিন নাকি তাঁরা অনেকে কেঁদেও ফেলেছিলেন।

ছবির ক্যামেরার দায়িত্বে থাকছেন মলয় মণ্ডল, সম্পাদনার দায়িত্ব থাকছে সুজয় দত্তরায়ের হাতে। ছবির সঙ্গীত পরিচালনা করছেন মৌসুমী চ্যাটার্জী। ছবিটি বড়পর্দায় মুক্তি পেতে চলেছে আগামী ২৯শে মার্চ।

Author

  • Debasmita Biswas

    বেথুন কলেজ থেকে উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতক। পড়ার নেশা ছোট থেকে, প্রাথমিকভাবে লেখালেখির শুরু শখেই। তারপর সংবাদপত্র, পত্র-পত্রিকায় সমালোচনা পড়ার অভ্যাস আর বিভিন্ন নাটক, সিনেমা দেখার পর বিশ্লেষণ করার শখ থেকেই ইচ্ছে সমালোচক হওয়ার। বিনোদনজগতের বিভিন্ন খবর করার পাশাপাশি নাটক এবং সিনেমা দেখে তার গঠনমূলক সমালোচনাও করেন তিনি।

    View all posts
Scroll to Top