সেই কোনকালে রবিঠাকুর প্রশ্ন করেছিলেন, ‘ভালবাসা কারে কয়’! সে প্রশ্নের উত্তর বাঙালি খুঁজে পাক আর না পাক, খুব তাড়াতাড়িই পর্দায় এক চিরন্তন ভালবাসার ছবি উপহার পেতে চলেছে তারা। কথা হচ্ছে, ‘সেদিন কুয়াশা ছিল’ ছবির পরিচালক অর্ণব মিদ্যার পরিচালনায় রুক্মিণী মৈত্রের আগামী ছবি ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’ নিয়ে।
চিরন্তন ভালবাসার গল্প বটে, তবে এ ভালবাসার গল্প সমবয়সী নারী-পুরুষের প্রেমের সম্পর্কের গল্প নয়। আসলে প্রতিটা সম্পর্কের গভীর এক আত্মিক টান, পারস্পরিক শ্রদ্ধা থাকে। থাকে আগলে রাখার দায়িত্ববোধ। কিছু সম্পর্ক আমাদের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ, অথচ সেই সম্পর্কগুলোকেই আমরা যত্ন করতে ভুলে যাই অনেকসময়। ধীরে ধীরে সেইসব সম্পর্কের উপর পড়ে ধুলোর আস্তরণ। সেই আস্তরণ আলতো হাতে সরিয়ে, আদর-যত্ন-ভালোবাসার আলপথ ধরে হেঁটেই হাঁটি হাঁটি পা পা করে পৌঁছতে হয় এই গল্পের চরিত্রদের কাছে।
ছবির মুখ্য চরিত্রে অভিনয় করছেন জনপ্রিয় অভিনেত্রী রুক্মিণী মৈত্র। এই ছবির সম্পর্কে তিনি বলেন, ‘হাঁটি হাঁটি পা পা’-র গল্প যখন শুনি তখন কেন জানি না, গল্পটা আমাকে ভীষণ ভাবে ছুঁয়ে যায়। তারপর চিত্রনাট্য, সংলাপ নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা, কাঁটা ছেঁড়ার পরে আজ আমার সত্যিই খুব ভালো লাগছে যে দর্শকদের আমরা এইরকম একটা ছবি উপহার দিতে চলেছি। তাছাড়া অর্ণবের সাথে কথা বলে খুব ভালো লেগেছে , সংবেদনশীল মানুষ, আর আমাদের গল্পটা যেহেতু সম্পর্কের গল্প, আমার বিশ্বাস ছবিটা ও খুব ভাল বানাবে। ওর আগের ছবিগুলোও আমার ভালো লেগেছে। আশা করি একটা ভালো সিনেমা হতে চলেছে যা অবশ্যই আপনাদের মন ছুঁয়ে যাবে।’
পরিচালক নিজে এই ছবির কথা বলতে গিয়ে বলেছেন, ‘হাঁটি হাঁটি পা পা-র গল্প, চিত্রনাট্য নিয়ে আমরা দীর্ঘ দিন ধরেই কাজ করে চলেছি। গল্পটা আসলে রুক্মিণীকে ভেবেই লেখা। একটা সম্পর্কের গল্পে যেমন হাসি-কান্না, ভালোলাগা-ভালোবাসা থাকে, এই গল্পটা আসলে তারই যথাযথ সংবেদনশীল মিশ্রণ। গল্পটার চিত্রনাট্য, সংলাপ লেখার সময় সেই সংবেদনশীলতারই পরিচয় দিয়েছেন কাহিনীকার প্রিয়াঙ্কা পোদ্দার।
রুক্মিণীকে যখন গল্পটা শোনাতে যাই, ওনার চোখেমুখে সেই অভিব্যক্তিগুলোই দেখতে পাই, যেগুলো যেকোনো পরিচালক সিনেমা দেখার শেষে দর্শকদের থেকে দেখতে চান। গল্পটা শুনে রুক্মিণীর রাজি হওয়া, তারপর একসাথে দিনের পর দিন চিত্রনাট্য আর সংলাপ পরিমার্জনা, গল্পটাকে দর্শকদের মনের কাছাকাছি পৌঁছে দিতে পারবে বলেই আমাদের বিশ্বাস। আর রুক্মিণী যেভাবে চরিত্রের প্রয়োজনে একটার পর একটা ছবিতে নিজেকে ভেঙেচুরে দর্শকদের সামনে মেলে ধরছেন, এই ছবিতেই সেইরকমই কিছু হতে চলেছে। শুধু তাই নয়, এই ছবিতে আরও অনেক সারপ্রাইজ আছে, যা ক্রমশ প্রকাশ্য।’
ছবিটি প্রযোজনা করছে ‘সেল্যুলয়েড ফিল্মস’, সহপ্রযোজনা করছে ‘মানবতা কনসালট্যান্টস প্রাইভেট লিমিটেড’। ইতিমধ্যেই বিভিন্নধারার ছবিতে বিভিন্নধরনের চরিত্রে রুক্মিণীর অভিনয় মুগ্ধ করেছে দর্শকদের। আবারও যে তাঁর কাছ থেকে দুর্দান্ত একটা কাজ পাওয়া যাবে, বোঝা যাচ্ছে সহজেই।
বেথুন কলেজ থেকে উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতক। পড়ার নেশা ছোট থেকে, প্রাথমিকভাবে লেখালেখির শুরু শখেই। তারপর সংবাদপত্র, পত্র-পত্রিকায় সমালোচনা পড়ার অভ্যাস আর বিভিন্ন নাটক, সিনেমা দেখার পর বিশ্লেষণ করার শখ থেকেই ইচ্ছে সমালোচক হওয়ার। বিনোদনজগতের বিভিন্ন খবর করার পাশাপাশি নাটক এবং সিনেমা দেখে তার গঠনমূলক সমালোচনাও করেন তিনি।