Raja Rani Romeo: জনপ্রিয় জুটি অর্পণ স্বীকৃতি আবার ফিরছে! বাকি পুরোটাই চমক

ক্লিক অরিজিনাল্স এর আগামী ওয়েব সিরিজ এর প্রথম ঝলক প্রকাশ্যে! টিভি পর্দার জনপ্রিয় জুটি অর্পণ স্বীকৃতি এই প্রথম ছোটো পর্দার বাইরে ওয়েব সিরিজে কাজ করছেন। সিরিজের নাম রাজা রানী রোমিও। ক্লিক ওটিটি-তে খুব তাড়াতাড়ি আসবে এই ওয়েব সিরিজ

ইমরান মন্ডল (অর্পণ ঘোষাল) বেশ কিছুদিন হলো নিজের নাম পাল্টে মিঠুন দাস নাম নিয়ে ফুলবাড়ি অঞ্চলে থাকছে। ফুলবাড়ি ধাবায় ওয়েটারের কাজ করে ইমরান, নিশ্চিন্ত শান্তিপূর্ণ জীবন। খুব কম বয়সে একটা ঘটনায় পুলিশ কেসে ফেঁসে যাওয়ায় বর্ধমানে নিজের গ্রাম থেকে
পালাতে হয়েছিলো ইমরানকে, এর পর থেকে সারাজীবন শুধু পালিয়েই বেড়াচ্ছে ইমরান। কিন্তু ঠিক যখন তার মনে হচ্ছিলো তার জীবনের অন্ধকার অধ্যায়ের পরিসমাপ্তি ঘটেছে তখনই ধাবায় এক কাস্টোমারের ফেলে যাওয়া ফোন তার জীবন ওলোট পালোট করে দেয়।

এক সুন্দরী মহিলা (স্বীকৃতি মজুমদার) ওই ফেলে যাওয়া ফোনটা নিতে আসে আর প্রথম দেখাতেই ইমরানের পায়ের তলার মাটি সরে যায়। এক অদ্ভুত আকর্ষণ আঁকড়ে ধরে ইমরানকে।তারা বেশ কয়েকবার দেখা করে এবং ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে সম্পর্কের গভীরতা । এই মহিলা, গায়ত্রী, আসলে বিষ্ণু অধিকারীর (জয়জীৎ ব্যানার্জি) স্ত্রী, যিনি ফুলবাড়ির পাশেই পাহাড়গন্জ এলাকার একজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী। গুড্ডু (জিত সুন্দর) ইমরানের একমাত্র বন্ধু, বারবার সতর্ক করে ইমরানকে, ভয়ও দেখায়, কিন্তু ইমরান তখন অসহায় পতঙ্গের মতোই আলোর দিকে ছুটছে।

গায়ত্রী ইমরানকে বলে তার দুর্বিষহ জীবনের কথা । বিষ্ণুর হাতে সে কিভাবে অত্যাচারিত হয় প্রতিনিয়ত। আর এর পর দুজনে মিলেই তৈরি করে একটা মাস্টার প্ল্যান । গায়ত্রীকে কিডন্যাপের নাটক করবে ইমরান, দাবি করবে মোটা মুক্তিপণ আর তারপর তারা সেই টাকা নিয়ে চলে যাবে অনেক দূরে । বিষ্ণু এবং তার প্রভাব যেখানে তাদের আর ছুঁতে পারবেনা । তারা সংসার পাতবে,শুরু করবে নতুন জীবন।

নির্দিষ্ট দিনে প্ল্যানমাফিক ইমরান গায়ত্রীকে পুরোনো এক কেল্লায় বন্দি সাজিয়ে নিজে চলে যায় মুক্তিপনের টাকা আনতে। কিন্তু সে জানতো না সেখানে তার জন্য অপেক্ষা করে রয়েছে পুলিশ।কোনো মতে ভাগ্যের জোরে বেঁচে যায় ইমরান আর কেউ চিনতে পারার আগে সে চম্পট দেয় সেখান থেকে। কিন্তু কেল্লায় ফিরে সে দেখে গায়ত্রী নেই আর গায়ত্রীর জায়গায় তার মতো শাড়ি পরা অন্য এক মহিলার মৃতদেহ পড়ে আছে।

ইমরান ঘাবড়ে যায় আর কি করবে বুঝতে পারে না। ঠিক তখনই পুলিশ কেল্লায় ঢুকে পড়ে আর চারিদিক ঘিরে নেয়। আবার পালানো ছাড়া আর কোনো গতি থাকে না ইমরানের হাতে।কিন্তু ইমরানের মাথায় তখন প্রশ্নের জট পেকে আছে। গায়ত্রী কোথায়? সে কি ঠিক আছে?
গায়ত্রী র শাড়ি পরে এই মহিলাটি কে? একে মারলোই বা কে? পুলিশ কি করে এই কেল্লার ব্যাপারে খোঁজ পেল? ইমরানের জীবনটা আবার সেই মোড়ে এসে দাঁড়ায় যেখানে সে আবার পালাচ্ছে কিন্তু এখন তার মনে প্রচুর প্রশ্ন। আর তাকে সেই উত্তরগুলো খুঁজতেই হবে। কিন্তু
পুলিশের চোখ এড়িয়ে সে কিভাবে সমাধান করবে এই রহস্য? আজ সে যদি গুড্ডুর কথা শুনতো তাহলে হয়তো তার জীবনে এই উথাল পাথাল ঝড়টা আসত না।

রাজা রানী রোমিও যেমন ভালোবাসার গল্প, তেমনই বিশ্বাসঘাতকতা আর প্রতিশোধেরও গল্প ।এখানে সব চরিত্রই ধুসর। প্রত্যেকেরই আছে কিছু নিহিত স্বার্থ আর তার জন্যেই তারা এমন অবিশ্বাস্য কিছু ঘটনা ঘটায় যা আমাদের চমকে দিতে থাকে বারবার । এই ওয়েব সিরিজের পরিচালক জয়দীপ ব্যানার্জি জানিয়েছেন,রাজা রাণী রোমিও মূলত একটি রোম্যান্টিক থ্রিলার, যে ঘরানার কাজ আমাদের চারপাশে আজকাল বিশেষ হয়না। ক্লিক-এর সাথে ৪বছরে আমার চতুর্থ প্রজেক্ট এটি।

ওদের সাথে কাজ করা একটা পরিবারের মতন স্বাচ্ছন্দ্য এসে গেছে। ওনারা সব সময়েই কাজের গুণগত মান বাড়াতে সক্রিয় ভাবে সমর্থন করে যান পুরো টিম কে।এই গল্পটা মাথায় ছিলো বিগত প্রায় ছয় বছর ধরে, যদিও চিত্রনাট্য চূড়ান্ত করতে বেশ খানিক সময় এবং পরিশ্রম ব্যয় করতে হয়েছে আমাদের। বাংলার বটতলার সাহিত্য থেকে ৯০’জ এর বলিউড থ্রিলার, যাবতীয় ‘পাল্প’ শিল্পই হলো আমার এই সিরিজের অনুপ্রেরণা। এখানে চরিত্ররা জটিল, বহুমাত্রিক এবং অবশ্যই ধূসর .. অভিনেতারা অত্যন্ত দক্ষতা এবং নৈপুণ্যের সাথে এই চরিত্রগুলিতে প্রাণ দিয়েছেন। আলাদা করে বলতেই হবে অনিরের চিত্রগ্রহণ এবং প্রান্জল দাসের সঙ্গীতের কথা, যা এই সিরিজটিকে অন্য মাত্রা দিয়েছে।

টিভি পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী স্বীকৃতি এই ওয়েব সিরিজ নিয়ে খুব আশাবাদী।তিনি জানিয়েছেন,রাজা রাণী রোমিও-তে আমার প্রথমেই যেটা দারুণ লেগেছিলো তা হলো গল্পের গভীরতা এবং অবশ্যই এর চিত্রনাট্য যা ক্রমাগত দর্শকের মনস্তত্ত্বকে প্রভাবিত করে।আমার চরিত্রেরও একটা অন্ধকার দিক ছিলো যা একজন অভিনেতার কাছে যতটা চ্যালেন্জিং ততটাই আকর্ষণীয়। তবে আমরা বেশ কিছুদিন ধরে ওয়ার্কশপ করেছিলাম যাতে সেটে কোনও অসুবিধা না হয় এবং এক্ষেত্রে অর্পণের মতো সহ অভিনেতা থাকায় আমার একটু বাড়তি সুবিধা হয়েছে। ওর সাথে আমার এটা দ্বিতীয় কাজ। দর্শক আমাদের জুটিকে বারবার একসাথে দেখতে চেয়েছিলেন, তারা অপেক্ষা করেছেন কবে আমরা পর্দায় ফিরবো। সত্যি বলতে আমিও চেয়েছিলাম কারণ প্রথমত সহ অভিনেতা হিসেবে অর্পণ আর আমার একটা কমফর্ট জোন আছে এবং দ্বিতীয়ত আমি প্রতিনিয়ত ওর থেকে নতুন কিছু শিখতে পারি। মনে হয় এই সিরিজটা দেখে দর্শকেরা খুশি তো হবেনই, তবে একটা সারপ্রাইজও পাবেন।পরিচালক জয়দীপ এবং ক্লিকের সাথে এটা আমার প্রথম কাজ। এবং এটা একটা দারুণ অভিজ্ঞতা। জয়দীপদার গুণ হলো ওর প্রচন্ড ধৈর্য। ও জানে ও চরিত্রটা থেকে কি চাইছে কিন্তু একইসাথে ও অভিনেতাদের স্বাধীনতাও দিতে জানে। দারুণ লেগেছে ওর সাথে কাজ করে, ভবিষ্যতে ওর সাথে আবার কাজ করার ইচ্ছে আছে। নতুন প্ল্যাটফর্ম, ইউনিটে সকলেই নতুন মানুষ, ফলে একটা প্রাথমিক আশঙ্কা কাজ করছিলো। কিন্তু আমরা সকলে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই বন্ধু হয়ে উঠেছিলাম। আর এটা না হলে হয়তো নির্দিষ্ট সময়ে এত প্রতিকূলতা বিশেষত টানা বৃষ্টির মধ্যে আমরা শিডিউল শেষ করতে পারতামনা। প্রত্যেকেই অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে, নিজের সেরাটা দিয়েছে ফলে এই সিরিজটা নিয়ে আমি প্রচন্ড আশাবাদী।

এই ওয়েব সিরিজের অন্যতম প্রধান অভিনেতা অর্পণ জানিয়েছেন,রাজা, রাণী, রোমিও ওটিটি প্লাটফর্ম ক্লিক ও নির্দেশক জয়দীপ ব্যানার্জির সাথে আমার প্রথম কাজ। আমি সবসময়ই বিশ্বাস করি এই মাধ্যমে নির্দেশকই পুরো কাজের মেজাজ এবং ধরন নির্দিষ্ট করে দেন। এক্ষেত্রে জয়দীপ দা শুরু থেকেই আমাদের সবাইকে খুব অনায়াসে নিজের ভাবনার সাথে জড়িয়ে নিয়েছিলো, ফলে শুটিং এ অনেক সময় বৃষ্টি বা অন্যান্য কারণে তাড়াহুড়ো হলেও অভিনেতা হিসেবে কখনও নিজেকে ইনকমপ্লিট মনে হয়নি। আর আমার পুরোনো সহ-অভিনেতা স্বীকৃতি থাকায় আমি তো একটু বেশীই আত্মবিশ্বাসী ছিলাম, যদিও স্বীকৃতি এই কথাটা শুনে ভাববে আমি মজা করেছি।

তবে এই শুটিং এ একটা সময় আমার নিজেরই মনে হচ্ছিলো শুট সম্ভব না, তার মূল কারণ বৃষ্টি, যার ফলে শুরুতেই দুটো দিন নষ্ট হয়ে যায়। তবু সেই অবস্থা থেকে নির্দিষ্ট সময়ে যে আমরা শিডিউল কমপ্লিট করতে পেরেছি তার মূল কারণ অভিনেতা এবং অবশ্যই ক্যামেরার পিছনের মানুষদের অক্লান্ত পরিশ্রম।

টিভি পর্দার জনপ্রিয় জুটি অর্পণ স্বীকৃতি এই প্রথম ছোটো পর্দার বাইরে ওয়েব সিরিজে কাজ করছেন।সিরিজের নাম রাজা রানী রোমিও।ক্লিক ওটিটি-তে খুব তাড়াতাড়ি আসবে এই ওয়েব সিরিজ

Author

Scroll to Top