১৯৬৫ সালে জন্ম হয়েছিল ফেলুদার। ১৯৭১ সালে ‘সোনার কেল্লা’ উপন্যাসটি লিখেছিলেন সত্যজিৎ রায়। তার বছরতিনেক পরে, প্রথমবারের জন্য ফেলুদাকে বড় পর্দায় নিয়ে এলেন তিনি। সালটা ১৯৭৪।
কেবল ফেলুদাই নন, তাঁর সঙ্গে প্রথমবার বড়পর্দায় পা রেখেছিল তোপসে। সঙ্গী ছিলেন লালমোহনবাবু, সিধু জ্যাঠা, ডক্টক হাজরা আর ছোট্ট মুকুল। পূর্বজন্মে দেখা সোনার কেল্লার কথা প্রায়শই মনে পড়ত জাতিস্মর মুকুলের। ঘটনাপ্রবাহ তাকে নিয়ে গিয়ে দাঁড় করায় বিপদের দোরগোড়ায়। সেই বিপদ থেকে অপহৃত মুকুলকে কীভাবে উদ্ধার করে আনেন ফেলুদা, কীভাবেই বা শাস্তি পায় আসল ‘দুষ্টু লোক’, ছবির গল্পে সেই কথাই উঠে আসে। জাতীয় পুরস্কারের মঞ্চে সেরা বাংলা চলচ্চিত্র, সেরা পরিচালক, চিত্রনাট্য, সেরা শিশুশিল্পী, সিনেমাটোগ্রাফি-সহ অনেকগুলো ক্ষেত্রে পুরস্কৃত হয় এই ছবি। দেশের বাইরে, তেহরানেও সেরা শিশু এবং কিশোরদের ছবি হিসেবে পুরস্কার পায় ‘সোনার কেল্লা’।
কলকাতার ইন্দ্রপুরী স্টুডিও, জয়সলমীর এর পাশাপাশি ভবানীপুরের পদ্মপুকুর অঞ্চলেও হয়েছিল ছবির শ্যুটিং। যেটা আজও মুকুলের পাড়া বলেই পরিচিত।
ছবিমুক্তির পর কেটে গিয়েছে পঞ্চাশবছর। পঞ্চাশ বছর পর মুকুল আবার ফিরল তার নিজের পাড়ায়। বিগত বেশ কিছু বছর ধরেই দ্য ড্রিমার্স মিউজিক পিআর এজেন্সি ক্যালেন্ডার প্রকাশ করে আসছে। এবছর ‘সোনার কেল্লা’র পঞ্চাশ বছর উপল়ক্ষ্যে তাদের বিষয় ‘সোনার কেল্লা ৫০’। মূল ভাবনায় সংস্থার কর্ণধার সুদীপ্ত চন্দ। নিবেদনে শ্যাম সুন্দর কোং জুয়েলার্স। ক্যালেন্ডার প্রকাশ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সত্যজিৎ-পুত্র সন্দীপ রায়, ‘সোনার কেল্লা’র তোপসে সিদ্ধার্থ চট্টোপাধ্যায়, ‘সোনার কেল্লা’র মুকুল কুশল চক্রবর্তী।
ক্যালেন্ডারে বিশিষ্ট সত্যজিৎ বিষয়ক সংগ্রাহক দেবাশীষ মুখোপাধ্যায় এর সংগ্রহ থেকে থাকছে ছবির শ্যুটিংয়ের ছবি, লবি কার্ড, বুকলেট, সত্যজিৎ রায়ের নিজের হাতে আঁকা ছবির টাইটেল কার্ড, ফেলুদার ঘরের নকশা, সিনেমার পোস্টার, বইয়ের প্রচ্ছদ-সহ আরো অনেক কিছু। সংস্থার কর্ণধার সুদীপ্ত চন্দ বলেন, ‘সোনার কেল্লা এমন একটা ছবি যা সব বয়সের দর্শকের প্রিয়। একটা মনোমুগ্ধকর মেকিং। ছবির পঞ্চাশ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে মুকুল তার পুরনো পাড়ায় ফিরল। এটা এমন একটা মুহূর্ত, যা চিরস্মরণীয় হয়ে থেকে যাবে। আমাদের সংস্থার ক্যালেন্ডার প্রকাশ উপলক্ষ্যে এমন এক আয়োজন আশা করি সকলের ভালো লাগবে।’
গোয়েন্দা সাহিত্য ভালবাসেন, অথচ ফেলুদাকে ভালবাসেন না এমন বাঙালি খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। কাজেই, ‘সোনার কেল্লা’ ছবির পঞ্চাশবছর পূর্তিতে এমন একটা উদ্যোগ যে সকলকেই খুশী করবে, তা বলা যায় নিশ্চিতভাবেই।