বাউলের প্রতি মানুষের ভালবাসা আজকের নয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বব ডিলান থেকে শুরু করে অ্যালেন গিন্সবার্গের মতো শিল্পীদের অনুপ্রাণিত করেছে বাউলসঙ্গীত। বাঙালি অভিনেতা-পরিচালক সৌম্যজিৎ মজুমদারের ‘জয়গুরু’ ছবিটি তৈরী হবে বাউল এবং লোকসঙ্গীতশিল্পী পার্বতী বাউলের জীবনী অবলম্বনে।
বাউলকে মানবতার অস্পষ্ট সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের (Intangible Cultural Heritage of Humanity) স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। প্রাচীন এই ঘরাণা আদতে অবিভক্ত বাংলা থেকে উদ্ভুত নৃত্যগীতির এক আধ্যাত্মিক মেলবন্ধন। বাঙালি অভিনেতা-পরিচালক সৌম্যজিৎ মজুমদারের পরবর্তী ছবি ‘জয়গুরু’ এবার ‘কান ফিল্ম মার্কেট’-এ উপস্থিতি পেয়েছে। লোকশিল্পী পার্বতী বাউলের জীবনের ওপর নির্ভর করে এই ছবিটি তৈরি হবে। ইন্দো-ইউএসএ-ইউকে-ফ্রান্স সহ-প্রযোজনার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক সৌহার্দ্য স্থাপন করছে এই ছবি।
ছবিটি প্রসঙ্গে সৌম্যজিৎ মজুমদার বলেন, ‘কান চলচ্চিত্র উৎসবের সঙ্গে আমার সংযোগ শুরু হয়েছিল 2017 সালে, ফরাসি চলচ্চিত্র ‘ক্র্যাশ টেস্ট অ্যাগলে’-এর প্রিমিয়ারের মাধ্যমে। সেই বিদেশী চলচ্চিত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিলাম আমি। এখন, 2024 সালে আমার চলচ্চিত্র জয়গুরু ‘কান ফিল্ম মার্কেট’-এ উপস্থিতি পেয়েছে। মনে হচ্ছে, এই বৃত্তটা পূর্ণ হল।’ পরবর্তী কান ফিল্ম ফেস্টিভ্যালে ছবিটি দেখানো হবে। তাঁর মতে, ‘জয়গুরু শুধু একটা ছবি নয়, এটা আমার ‘প্রেয়ার’। দু’বছর ধরে আমি পার্বতীজিকে নিয়ে গবেষণা করছি যে, বাউলের আধ্যাত্মিক শক্তি জীবনকে বদলে দিতে পারে কিনা।’
তিনি জানিয়েছেন, পার্বতী বাউলের যাত্রার উপর তৈরী হলেও, চিরাচরিত ‘বায়োপিক’ হবে না এই ছবি। ছবির মূল ফোটোগ্রাফি শুরু হবে ২০২৫ সালে, সিনেমাটোগ্রাফার রবি বর্মনের নেতৃত্বে। এর আগে মণিরত্নম, ইমতিয়াজ আলী, অনুরাগ বসুর বিভিন্ন ছবিতে দেখা গিয়েছে তাঁর কাজ। পার্বতী জানান, ‘এক বছরেরও বেশি সময় ধরে সৌম্যজিৎ এই গল্পটির জন্য প্রচুর পরিশ্রম করেছেন। এটা কোনো একজন ব্যক্তির জীবনের গল্প বলার চেষ্টা নয়। শুরু থেকেই কালজয়ী আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের গল্প বলবে এই ছবি।’
সৌম্যজিৎ মজুমদারের ‘লোক আর্টস কালেকটিভ’ (ভারত/ইউকে) এবং ক্যালিফোর্নিয়া-ভিত্তিক প্রযোজক অনিরুদ্ধ এবং অপর্ণা দাশগুপ্ত (Adited Motion Pictures – USA/ভারত) প্রযোজনা করেছেন এই ছবি। লন্ডন সিটি কর্পোরেশন কালচার অ্যান্ড হেরিটেজের চেয়ারম্যান ও মোরিঙ্গা স্টুডিওর প্রতিষ্ঠাতা-পরিচালক মনসুর আলি এবং ফ্রান্সের টুলুজ শহরের রাষ্ট্রদূত চয়ন সরকার ছবিটি সহ-প্রযোজনা করেছেন।
বেথুন কলেজ থেকে উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতক। পড়ার নেশা ছোট থেকে, প্রাথমিকভাবে লেখালেখির শুরু শখেই। তারপর সংবাদপত্র, পত্র-পত্রিকায় সমালোচনা পড়ার অভ্যাস আর বিভিন্ন নাটক, সিনেমা দেখার পর বিশ্লেষণ করার শখ থেকেই ইচ্ছে সমালোচক হওয়ার। বিনোদনজগতের বিভিন্ন খবর করার পাশাপাশি নাটক এবং সিনেমা দেখে তার গঠনমূলক সমালোচনাও করেন তিনি।