ভারতীয় চলচ্চিত্রের জনক বলা হয় যাঁকে, গত ৩০শে এপ্রিল ছিল সেই দাদাসাহেব ফালকের জন্মদিন। সেই উপলক্ষ্যেই অনুষ্ঠিত হল ১৪তম দাদা সাহেব ফালকে চলচ্চিত্র উৎসব, সেখানেই পুরস্কৃত হল নতুন ছবি ‘মেসবাড়ি’।
দীপান্বিতা সেনগুপ্ত পরিচালিত ‘মেসবাড়ি’ তৈরী হয়েছিল অত্যন্ত সংবেদনশীল একটা গল্পের ওপর ভিত্তি করে। বেশ কিছুদিন আগে সেটা মুক্তি পেয়েছ ক্লিক ওটিটি প্ল্যাটফর্মে। স্বামীকে হারিয়ে বৃদ্ধাশ্রমে চলে যাওয়ার ঘটনা শোনা যায় আকছার। কিন্তু সেই বৃদ্ধাশ্রমের স্থান যদি নেয় মেসবাড়ি? এক বৃদ্ধা তাঁর স্বামীকে হারিয়ে, বৃদ্ধাশ্রমের পরিবর্তে শহরের একটি মেসে এসে ওঠে। তাঁর লক্ষ্য কেবল, জীবনের শেষ দিনগুলি একটু আনন্দে-মজায় বাঁচা। কিন্তু তা সফল হয় কি?
পরিচালনার পাশাপাশি ছবির কাহিনী ও চিত্রনাট্যও লিখেছেন দীপান্বিতা সেনগুপ্ত। জানা গিয়েছিল, কাহিনীর সূত্র তিনি পেয়েছেন দুই বাংলার জনপ্রিয় লেখক হুমায়ুন আহমেদের একটি লেখায়। ‘অফ দ্য স্পেকট্রাম’ নিবেদিত এই ছবিতে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছিল খেয়ালী ঘোষ দস্তিদার, বিশ্বনাথ বসু, দেবদূত ঘোষ, ধীমান ভট্টাচার্য্য, আবীর সেনগুপ্ত এবং শুভশ্রী সেনগুপ্তকে।
ছবির সঙ্গীত পরিচালনার দায়িত্বে আছেন ইন্দ্রদীপ দাশগুপ্ত। দীপান্বিতা সেনগুপ্তের লেখা গান গেয়েছেন জনপ্রিয় গায়ক রূপঙ্কর বাগচী। মুক্তির পরে টলিউড ইন্ডাস্ট্রি থেকে দর্শকমহল, সবক্ষেত্রেই প্রশংসা পেয়েছে ‘মেসবাড়ি’। পরিচালকের গল্প বিশ্লেষণ ও ছবিটির ডিটেলিং মনে দাগ কেটেছে সবার। স্বনামধন্য অভিনেতা খরাজ মুখোপাধ্যায়ের কথায়, ‘গানটা চমৎকার, সবাই খুব ভাল অভিনয় করেছে। ভাবনাটাও ভাল লেগেছে আমার।’
১৪তম দাদা সাহেব ফালকে চলচ্চিত্র উৎসবে প্রাপ্ত পুরস্কারের মত একটা ‘প্রেস্টিজিয়াস অ্যাওয়ার্ড’-এ সম্মানিত ‘মেসবাড়ি’। স্বাভাবিকভাবেই বেশ উচ্ছ্বসিত ছবির অভিনেতা থেকে পরিচালক।
বর্ষীয়ান মানুষগুলোর এই একা হয়ে যাওয়ার পিছনে দায়ী কারা! যে প্রজন্ম ছুটে-দৌড়ে তৈরী করে পরবর্তী প্রজন্মকে, ছোটার ক্ষমতা হারিয়ে গেলে মূল্য কি কমে যায় তাঁদের? ক্রমাগত ছুটতে ছুটতে মানুষ ভুলে যায়, এ এক চক্রাকার আবর্তন। এক প্রজন্ম অবহেলা করে তা আগের প্রজন্মকে, আবার তাদের বয়সকালে একই একাকিত্বের অন্ধকারে তারাও ডুবে যায় পরবর্তী প্রজন্মের অবহেলায়। সেই কথাই ফের মনে করিয়ে দেয় ‘মেসবাড়ি’।
বেথুন কলেজ থেকে উদ্ভিদবিদ্যায় স্নাতক। পড়ার নেশা ছোট থেকে, প্রাথমিকভাবে লেখালেখির শুরু শখেই। তারপর সংবাদপত্র, পত্র-পত্রিকায় সমালোচনা পড়ার অভ্যাস আর বিভিন্ন নাটক, সিনেমা দেখার পর বিশ্লেষণ করার শখ থেকেই ইচ্ছে সমালোচক হওয়ার। বিনোদনজগতের বিভিন্ন খবর করার পাশাপাশি নাটক এবং সিনেমা দেখে তার গঠনমূলক সমালোচনাও করেন তিনি।